Header Ads

প্রশ্ন: বে-নামাযীকে দাওয়াত দেয়ার আদর্শ পদ্ধতি কী?


উত্তরঃ
আলহামদুলিল্লাহ।Image result for সালাত

এক:
নামায আদায় ও অন্যান্য ইবাদত পালনের দাওয়াত দেয়ার ক্ষেত্রে টার্গেটকৃত ব্যক্তির অবস্থা দেখতে হবে, তার সাথে উৎসাহপ্রদান ও ভীতিপ্রদর্শন এ দুটো পদ্ধতির কোনটি উপযোগী সেটা বিবেচনায় রাখতে হবে। যদিও শরিয়তের সাধারণ নীতি হচ্ছে উভয় পদ্ধতি একত্রে প্রয়োগ করা। তাছাড়া দাওয়াতের টার্গেটকৃত ব্যক্তির অগ্রসরতা কিংবা পিছুটান, ওয়াযের দ্বারা প্রভাবিত হওয়া কিংবা না-হওয়া এ বিষয়গুলোও বিবেচনায় রাখতে হবে।
দুই:
বে-নামাযীকে দাওয়াত দেয়ার আদর্শ পদ্ধতি সংক্ষেপে নিম্নরূপ:
১। তাকে স্মরণ করিয়ে দেয়া যে, নামায একটি ফরয ইবাদত এবং ঈমানের পর নামায ইসলামের সবচেয়ে মহান রুকন।
২। তাকে নামাযের কিছু ফযিলত অবহিত করা; যেমন- আল্লাহ্‌ বান্দার উপর যা কিছু ফরয করেছেন তার মধ্যে নামায সর্বোত্তম। রবের নৈকট্য হাছিলের সর্বোত্তম মাধ্যম নামায। ধর্মীয় ইবাদতগুলোর মধ্যে বান্দার কাছ থেকে সর্বপ্রথম নামাযের হিসাব নেয়া হবে। কবিরা গুনাহ থেকে বিরত থাকলে পাঁচ ওয়াক্ত নামায এর মধ্যবর্তী সকল পাপ মোচন করে। একটিমাত্র সেজদার মাধ্যমে বান্দার এক ধাপ মর্যাদা সমুন্নত হয় এবং একটি পাপ মোচন হয়...ইত্যাদি নামাযের ফযিলতের ব্যাপারে আরও যা কিছু বর্ণিত হয়েছে। এর মাধ্যমে আশা করি, তার অন্তর খুলে যাবে এবং নামায তার চক্ষুশীতলে পরিণত হবে, যেভাবে নামায নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি্ ওয়া সাল্লামের চক্ষু শীতল ছিল।
৩। নামায বর্জনকারীর ব্যাপারে যে কঠোর শাস্তি বর্ণিত হয়েছে এবং আলেমগণ নামায বর্জনকারী কাফের হয়ে যাওয়া ও মুরতাদ হয়ে যাওয়ার ব্যাপারে যে মতভেদ করেছেন তাকে সে সব অবহিত করা। নামায বর্জনকারীকে ইসলাম স্বাধীনভাবে সমাজে বসবাস করার সুযোগ দেয় না- তাকে এটি জানিয়ে দয়া। কারণ নামায বর্জনকারীর ক্ষেত্রে করণীয় হচ্ছে তাকে নামাযের দিকে আহ্বান করা। যদি সে উপর্যুপরি নামায বর্জন করতেই থাকে তাহলে ইমাম আহমাদ ও তার মতানুসারীদের মাযহাব অনুযায়ী তাকে মুরতাদ হিসেবে হত্যা করা হবে। ইমাম মালেক ও শাফেয়ির মাযহাব মতে, তাকে হদ্দ বা শরয়ি শাস্তি হিসেবে হত্যা করা হবে। আর ইমাম আবু হানিফার মাযহাব মতে, তাকে গ্রেফতার করা হবে ও জেলে পাঠানো হবে। তাকে মুক্তভাবে ছেড়ে দেওয়ার কথা আলেমগণের কেউই বলেননি। নামায বর্জনকারীকে বলা হবে: আপনি কি এতে সন্তুষ্ট যে, আলেমগণ আপনার কাফের হওয়া, কিংবা আপনাকে হত্যা করা কিংবা গ্রেফতার করা নিয়ে মতভেদ করুক?!
৪। তাকে আল্লাহ্‌র সাক্ষাত, মৃত্যু ও কবরের কথা স্মরণ করিয়ে দেওয়া। নামায বর্জনকারীর যে, খারাপ মৃত্যু হয় ও কবরে আযাব হয় তাকে সেটা স্মরণ করিয়ে দেয়া।
৫। নির্ধারিত সময় এর চেয়ে দেরীতে নামায আদায় করা কবিরা গুনাহ্‌। “তাদের পরে এল অযোগ্য উত্তরসূরীরা, তারা সালাত নষ্ট করল এবং কুপ্রবৃত্তির অনুবর্তী হল। কাজেই অচিরেই তারা গাইয়্য (ক্ষতিগ্রস্ততার) সম্মুখীন হবে।”[সূরা মারিয়াম, আয়াত: ৫৯] ইবনে মাসউদ (রাঃ) বলেন: ‘গাইয়্য’ হচ্ছে জাহান্নামের একটি উপত্যকা; যেটা সুগভীর ও এর স্বাদ মন্দ। আল্লাহ্‌ তাআলা আরও বলেন: “সেসব নামাযীদের জন্য ধ্বংস যারা তাদের নামাযের ব্যাপারে গাফেল” [সূরা মাউন, আয়াত: ৪,৫]
৬। বে-নামাযীকে কাফের ঘোষণা করার যে অভিমত রয়েছে এর ভিত্তিতে মহা জটিল কিছু বিষয় ঘটবে সেগুলো তাকে ব্যাখ্যা করে বুঝিয়ে দেওয়া। যেমন, তারা বিবাহ বাতিল হয়ে যাবে, বৈবাহিক সম্পর্ক ও স্ত্রীর সাথে সংসার করা হারাম হয়ে যাবে, মৃত্যুর পর তাকে গোসল করানো হবে না, তার জানাযার নামায পড়ানো হবে না। যে দলিলগুলো বে-নামাযীর কাফের হওয়া প্রমাণ করে এর মধ্যে রয়েছে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণী: “কোন ব্যক্তির মাঝে এবং শির্‌ক ও কুফরের মাঝে সংযোগ হচ্ছে সালাত বর্জন।”[সহিহ মুসলিম (৮২)] তিনি আরও বলেছেন: “আমাদের ও তাদের মধ্যে চুক্তি হলো নামাযের। সুতরাং যে ব্যক্তি নামায ত্যাগ করল, সে কুফরি করল।”[জামে তিরমিযী (২৬২১), সুনানে নাসাঈ (৪৬৩), সুনানে ইবনে মাজাহ (১০৭৯)]
৭। তাকে নামায সংক্রান্ত, নামায বর্জনকারী ও অবহেলাকারীর শাস্তি সংক্রান্ত কিছু পুস্তিকা ও ক্যাসেট উপহার দেওয়া।
সূত্রঃ https://plus.google.com/u/0/105343983262916618019/posts/5bFNrF3k1Kt

No comments

Theme images by enjoynz. Powered by Blogger.